৯ বছরের ছেলের সামনে কারাফটকে মা-বাবার বিয়ে

Dec 6, 2020 / 02:17pm
৯ বছরের ছেলের সামনে কারাফটকে মা-বাবার বিয়ে

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে নয় বছর বয়সী ছেলের সামনে বিয়ে হয়েছে বাবা-মায়ের। শনিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারের দফতরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে ধর্ষণ মামলার আসামি ও ভুক্তভোগীর এই বিয়ে আয়োজন। ধর্ষণ মামলায় আট বছর ধরে কারাবন্দি বাবা। বিয়ের শর্তে তার জামিন পাওয়ার কথা।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ উভয়পক্ষের সম্মতিতে এ বিয়ের আদেশ দেন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলসুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে কনেপক্ষকে কারাফটকে আসার সময় দেয়া ছিল। নির্ধারিত সময়ের একটু পরে কনেসহ দুই পক্ষের ১৪ জন কারাফটকে উপস্থিত হন। দ্রুত বিয়ের প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে।

তিনি আরও বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হিন্দু বিয়ে নিবন্ধক বর ও কনের সই নেন। পুরোহিত বিয়ের মন্ত্র পাঠ করেন। মালাবদলে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। কারাগারের পক্ষ থেকে কনেকে একটি কাতান শাড়ি উপহার দেয়া হয়।

জানা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার সিতানাথের ছেলে দিলীপের সঙ্গে তার খালাতো বোনের (ভিকটিম) ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে এই সম্পর্ক দৈহিক মেলামেশায় গড়ায়। এতে ভিকটিম গর্ভবতী হয়ে পড়ে। কিন্তু দিলীপ তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে সালিশ-বৈঠক হলেও তাতে কোন ফল আসেনি।

২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর মেডিকেল পরীক্ষায় মেয়েটি গর্ভবতী এটা প্রকাশ পায়। ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ি থানায় ধর্ষণ মামলা হয়। মামলায় ২০১২ সালের ১২ জুন দিলীপকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। রায়ে বলা হয়, যখন ভিকটিম ধর্ষণের শিকার হন তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর।

কারাগারে থাকা অবস্থায় দিলীপ হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। শুনানিকালে তার আইনজীবী জানান, ভিকটিম এখানে আছে। তারা বিয়ে করতে সম্মত। জামিন পেলে তাদের মধ্যে বিয়ে হবে। এ অবস্থায় আদালত কারাফটকে বিয়ের আয়োজন করতে জেল সুপারকে নির্দেশ দেন।