ফের উত্তপ্ত ব্যাংকক, আহত প্রায় অর্ধশত

ফের উত্তপ্ত থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক। গণতন্ত্রপন্থী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার রাজতন্ত্রপন্থী সমর্থকদের তুমুল সংঘর্ষ হয়। দুপক্ষের সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ প্রথমে লাঠিপেটা করে, পরে বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ মেশানো কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এ ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি ও রয়টার্স জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের অনেকের শরীরে বুলেটের আঘাত মিললেও পুলিশের দাবি তারা কোনো গুলিবর্ষণ করেনি।
কয়েক মাস ধরেই ব্যাংককে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। বর্তমান সরকারের ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছেন। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের দাবি বর্তমান সংবিধান বদলে গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে।
রাজার ক্ষমতাও কমাতে হবে। এর আগে পার্লামেন্টের সামনে দীর্ঘ আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের চাপে কারফিউ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিল থাই প্রশাসন। এরপরও শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রাখা যায়নি। তবে গতকাল মঙ্গলবারের মতো এত বড় সংঘাত গত চার মাসের মধ্যে থাইল্যান্ডে ঘটেনি।
এদিন ব্যাংককের রাজপথে মিছিল করে বেরিয়েছিলেন গণতন্ত্রপন্থি শিক্ষার্থীরা। তাঁদের লক্ষ্য ছিল পার্লামেন্ট ভবন। শান্তিপূর্ণ মিছিল চলার সময় রাজতন্ত্রপন্থিরা তাঁদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এসময় গণতন্ত্রপন্থিদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। পাল্টা আঘাত করেন গণতন্ত্রপন্থিরাও। এতে রণক্ষেত্রের রূপ নেয় রাজপথ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ দুপক্ষকে আলাদা করার চেষ্টা করে।
শুরু করে লাঠিপেটা। সেইসঙ্গে ব্যবহার করে বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ মেশানো কাঁদানে গ্যাস। কাঁদানে গ্যাসে বহু আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় অন্তত ৪০ জনকে। তাঁদের মধ্যে অনেকের শরীরে বুলেটের ক্ষত মিলেছে। তবে পুলিশ কোনো ধরনের গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। তা হলে কি রাজতন্ত্রপন্থিরা গুলি চালিয়েছিল? এ প্রশ্নের কোনো উত্তর এখন পর্যন্ত দিতে পারেনি পুলিশ।
যত দিন যাচ্ছে, থাইল্যান্ডের সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ তীব্র হচ্ছে। বহু সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রপন্থিদের সমর্থন করছেন। সরকার সংবিধানের কিছু অংশ পরিবর্তনের আশ্বাস দিলেও গণতন্ত্রপন্থিদের বক্তব্য, তা যথেষ্ট নয়। যেভাবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা দখল করে আছেন, এরও তীব্র বিরোধী তাঁরা। তাই প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।