ডাক্তার পিপিই নিয়ে আপত্তি তোলায় মানসিক হাসপাতালে পাঠাল ভারত!

প্রকাশিত: মে ২১, ২০২০ / ১১:১১অপরাহ্ণ
ডাক্তার পিপিই নিয়ে আপত্তি তোলায় মানসিক হাসপাতালে পাঠাল ভারত!

হাসপাতালে চিকিৎসাকর্মীদের পিপিই সঙ্কটের কথা জানিয়ে উ’দ্বে’গ প্রকাশ করে বরখাস্ত হওয়া ভারতের প্রখ্যাত এক চিকিৎসককে এবার মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চিকিৎসককে মানসিক হাসপাতালে ভর্তির এ ঘটনায় দেশটিতে ব্যাপক আলোচনা-স’মালোচনা শুরু হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

২০ বছরের অভিজ্ঞ অ্যানেসথেটিস্ট ডা. সুধাকর রাও দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো দেশটির গণমাধ্যমের শিরোনামে এসেছেন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় তামিলনাডু প্রদেশের বিশাখাপত্তমের একটি হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন তিনি।

সেখানে মাস্ক এবং পিপিই স’ঙ্ক’টের কথা জানিয়ে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার দৃশ্য ফেসবুক লাইভ করে আলোচনায় এসেছিলেন ডা. সুধাকর। তার এই ফেসবুক লাইভ মুহূর্তের মধ্যে ভা’ই’রাল হয়ে যায়।

পরে পুলিশ এই চিকিৎসককে হাসপাতাল থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে আনে। বর্তমানে এই চিকিৎসককে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ক’রো’না মহা’মা’রিতে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তের হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী ও প্রস্তুতির অভাবের কথা জানিয়ে চিকিৎসকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন।

এর মাঝেই নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়ে ফেসবুক লাইভ করার জে’রে ওই চিকিৎসক মানসিক ভারসাম্যহীন উল্লেখ করে হাসপাতালে পাঠানো হলো। শনিবার ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়া ওই চিকিৎসককে আট’কের ভিডিওতে প্রথমে দেখা যায় শার্টবিহীন অবস্থায়।

পরে দেখা যায় রাস্তার পাশে নিজের গাড়িতে বসে আছেন এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে চিৎকার করছেন তিনি। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এই চিকৎসক রাস্তার ওপর পড়ে আছেন।

তার পেছন দিক থেকে হাত বাঁধা রয়েছে। এ সময় পুলিশের এক কনস্টেবল ডা. সুধাকরকে লাঠি দিয়ে পে’টা’ন। পুলিশ বলছে, চিকিৎসককে পেটানো ওই কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।

অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকা পথচারীদের সামনে ওই চিকৎসককে বেঁধে একটি অটোরিকশাতে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।

এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডা. রাও বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার পথে গাড়ি থামিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। পরে তাকে গাড়ি থেকে জো’র’পূর্বক বের করে আনা হয়। তারা আমার মানিব্যাগ এবং ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে আমাকে মা’র’ধর করে।

এই চিকিৎসককে আ’ট’কের ঘটনা দেশটিতে ব্যাপক বি’ত’র্কের জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী এবং অন্যরা রাজ্য সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। রাজ্যের বি’রো’ধীদলীয় নেতারা পুলিশের বি’রু’দ্ধে অ’তিরিক্ত বলপ্রয়োগের অ’ভি’যোগ করেছেন।

তামিলনাডুর সরকারি একটি হাসপাতালের এই চিকিৎসক গত ৩ এপ্রিল পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী এবং মাস্ক স’ঙ্ক’টের অ’ভি’যোগ সাংবাদিকদের জানান। হাসপাতালের একটি বৈঠকে মাস্ক স’ঙ্ক’টে’র বিষয়টি তোলায় তাকে একবার বৈঠক থেকে বের করে দেয়া হয়।

ডা. রাও বলেন, নতুন মাস্ক না পাওয়া পর্যন্ত একটি মাস্ক আমাদেরকে ১৫ দিন পর্যন্ত ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু জীবন বি’পন্ন করে আমরা কীভাবে রোগীদের চিকিৎসা দেবো। স্থানীয় একটি টেলিভিশনে তার এই বক্তব্য প্রচার হওয়ার পর তা মুহূর্তের মধ্যে ভা’ই’রাল হয়ে যায়।

সরকার এ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিলেও চিকিৎসক রাওকে বরখাস্ত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জনসম্মুখে মাস্ক স’ঙ্ক’টের কথা জানিয়ে তিনি সরকারি চাকরিবিধি ল’ঙ্ঘ’ন করেছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়।

কয়েকদিন পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বরখাস্তের আদেশ বাতিলের অনুরোধ জানান তিনি। কিন্তু স্থানীয় সরকার তার এই অনুরোধের কোনও জবাব দেয়নি।

সূত্র- বিবিসি।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন