নিউজিল্যান্ড যেভাবে করোনাকে হার মানাল!

ক’রো’নায় কাঁ’পছে সারা বিশ্ব। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ ক’রো’নায় আ’ক্রা’ন্ত। মারা গেছেন দুই লাখেরও বেশি মানুষ। এই মা’র’ণ ভা’ই’রাসের ওষুধ বা ভ্যাকসিন এখনো উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়নি। এমন এক পরিস্থিতিতে স্বস্তির খবর শোনাল নিউজিল্যান্ড।
দেশটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কভিড-১৯ রোগে’র কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছে দেশটি। যে কারণে তারা কার্যকরভাবে করো’না’ভা’ইরাস থেকে মুক্তি পেয়েছে। সেই সঙ্গে করোনার কারণে অধিকাংশ বিধিনিষেধ উঠিয়ে দেওয়া হবে।
গত কয়েকদিন ধরে নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক অঙ্কে নেমে আসে দেশটিতে। আর রবিবার নতুন করে মাত্র একজন আ’ক্রা’ন্ত হয়েছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডান বলেছেন, তার দেশ এখনকার মতো ‘এ যু’দ্ধে জিতেছে’।
করো’না’ভা’ই’রাসের সং’ক্র’মণ ঠেকাতে নিউজিল্যান্ডে সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে নেয়া কঠোরতম বিধিনিষেধ শিথিল করার কয়েক ঘণ্টা আগে এ খবর পাওয়া গেল।
মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে অত্যাবশ্যক নয় এমন কিছু ব্যবসায়িক খাত, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হবে। তবে করো’ভা’ই’রাস ঠেকাতে পাওয়া সাফল্য নিয়ে ‘আত্মপ্রসাদে’ যেন কেউ না ভোগেন, সে বিষয়ে কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন।
লক’ডাউন তুলে নেওয়া হলেও বেশিরভাগ মানুষকেই এখনো সারাক্ষণ বাড়িতেই থাকতে হবে এবং সব ধরণের সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডান এক সরকারি ব্রিফিংয়ে বলেছেন, আমরা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করছি। কিন্তু মানুষের সামাজিক জীবন এখনি আবার চালু করা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ডে ব্যাপক হারে অ-শনাক্তকৃত কোনো কমিউনিটি ট্রান্সমিশন নেই। সে যু’দ্ধে আমরা জিতেছি। কিন্তু আমাদের যেন অবস্থাটা এমনই রাখতে পারি সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অ্যাশলি ব্লুমফিল্ড বলেছেন, গত কয়েক দিনে নতুন আ’ক্রা’ন্তের সংখ্যা অনেক কমে আসায় করো’না’ভা’ইরাস দূর করার জন্য সরকার যে লক্ষ্য ঠিক করেছে, তা আমরা অর্জন করতে পেরেছি বলে আমাদের বিশ্বাস।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দুজনই সত’র্ক করেছেন যে ভা’ই’রাস নির্মূল হবার ঘোষণা দেয়ার মানে এই নয় যে দেশে করোনা’ভা’ইরাস আ’ক্রা’ন্ত কেউ আর নতুন করে শনাক্ত হবেন না। নিউজিল্যান্ডে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ১৫০০ চেয়ে কম মানুষ আ’ক্রা’ন্ত হয়েছেন এবং ১৯ জন মা’রা গেছেন।
যেভাবে করো’না’ভা’ই’রা’সের ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করেছে নিউজিল্যান্ড
করোনা’ভা’ই’রাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে নিউজিল্যান্ডে যখন মাত্র ডজনখানেক রোগী শনাক্ত হন, তখনি দেশটি স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং ভ্রমণে কঠোর বি’ধি’নি’ষেধ আরোপ করে।
দেশটির সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়, এবং দেশটিতে প্রবেশ করা সকল মানুষকে বাধ্যতামূলক কোয়া’রে’ন্টিনে পাঠানো হয়। এছাড়া কঠোর ল’ক’ডাউন আরোপ করা হয়, এবং নমুনা পরীক্ষার হার বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে জোরদার করা হয় কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের ব্যবস্থাও।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা’ভা’ই’রাস প্রাদু’র্ভাব শুরুর পর পরই যদি দ্রুত ল’ক’ডাউন না দেয়া হত, তাহলে দিনে এক হাজারের ওপর নতুন রোগী শনাক্ত হত।
তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি কত খারাপ হতে পারত কেউ জানে না, কিন্তু আমাদের আগাম পরিকল্পনায় আমরা সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি এড়াতে পেরেছি। সোমবার মধ্যরাত থেকে দেশটিতে লেভেল ফোর পর্যায়ের লক’ডাউন থেকে লেভেল থ্রিতে নামিয়ে আনা হবে।
এর মানে হচ্ছে, টেকঅ্যাওয়ে সরবারহের জন্য রেস্তোরাঁ খোলা রাখাসহ বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই কাজকর্ম শুরু করতে পারবে। কিন্তু মুখোমুখি দেখাসাক্ষাৎ হয়, এমন কোনো কর্মকা’ণ্ডের অনুমোদন দেয়া হবে না।
বাসিন্দাদের আগের মতই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সংস্পর্শে থাকা এবং যেকোন মানুষের সাথে দুই মিটার দূরত্বে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গণজমায়েত এখনো আগের মত নিষিদ্ধ থাকবে, শপিং সেন্টার বন্ধ থাকবে এবং অধিকাংশ শিশু স্কুলে যাবে না। নিউজিল্যান্ড সীমান্তও বন্ধ থাকবে।
সূত্র: এনইপিআর, বিবিসি বাংলা।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন