ক’রোনা ৩৮০ বার জিন বদলেছে! ঘুম হা’রাম বিজ্ঞানীদের

Mar 11, 2020 / 06:31pm
ক’রোনা ৩৮০ বার জিন বদলেছে! ঘুম হা’রাম বিজ্ঞানীদের

বারবার নিজের জিন বদলে উত্তোরত্তর ভ’য়া’বহ হয়ে উঠছে ক’রো’না’ভা’ই’রাস। এরই মধ্যে সে টিকে থাকার স্বার্থে ৩৮০ বার নিজের জিন বদলে ফেলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কোভিড-১৯ এর এই জিন মিউটেশনই ভয়ের আসল কারণ। যার জেরে বিশ্বের সব বিজ্ঞানীদের ঘুম হা’রাম হয়ে গেছে। আ’ত’ঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে আমজনতার মধ্যেও। মাঝেই মাঝেই শোনা যাচ্ছে এবারে এই ভা’ই’রাসকে জ’ব্দ করা যাবে ভ্যা’কসিন দিয়ে। কিন্তু প্র’তিষেধক কতটা কাজের কাজ করতে পারবে সেই নিয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরাও চি’ন্তায় পড়েছেন।

হিউম্যান প্যাথোজেনিক ভা’ই’রাসের সং’ক্র’ম’ণ’জনিত অসুখের এক গবেষকের মতে, এতো কম সময়ের মধ্যে ঘন ঘন জিন মিউটেশন করে নিজের চরিত্র বদলে ফেলছে এই ভা’ই’রা’স। তাই একে রুখতে সুনির্দিষ্ট কোনও ওষুধ ব্যবহার করা মুশকিল।

প্রায় দুদশক ধরে ক’রো’না গোত্রেরই ভা’ই’রাস নিয়ে চিকিৎসকরা চিন্তিত। চীনের উহান থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এই কোভিড-১৯ ভা’ই’রা’সের ১৮ বছর আগে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সার্সও ঘুম কেড়ে নিয়েছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের।

সার্স রো’গা’ক্রা’ন্তদের মধ্যে মা’রা পড়তেন প্রায় ১০ শতাংশ। মার্স বা মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোমও ২০১২ সালে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন দ্রুত ভ্যাকসিন তৈরি করে তার সাহায্যে রোগের বাড়বাড়ন্ত আ’ট’কে দেয়া হয়। কোভিড-১৯ সেই গোত্রেরই জী’বা’ণু।

তবে আগের ভা’ই’রা’সদের থেকে এর কিছু চরিত্রগত তফাৎ আছে। তাই প্র’তিষেধক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চললেও কোনও কার্যকর ভ্যা’কসিন বা ওষুধ বানানো মুশকিল হয়ে পড়ছে।

গবেষকরা এখন হোস্ট ডিরেক্টেড থে’রাপির কথা ভাবছেন। ব্যাপারটা হলো, মানুষের জিনের যে প্রোটিনের উপর কোভিড-১৯ ভাই’রা’স বেড়ে ওঠে, তাকে নি’ষ্ক্রিয় করে দেয়া। তাদের ধারণা, তা হলেই হয়তো এই ভাইরাসের খেল খতম হবে।

প্রায় দুদশক ধরে ক’রোনা গোত্রেরই ভা’ই’রাস নিয়ে চিকিৎসকরা চিন্তিত। নভেল ক’রো’না’ভা’ই’রাসের চরিত্রগত বিশ্লেষণ করে ইতিমধ্যই গবেষকরা বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছেন।

• কোভিড-১৯ ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমেই বাড়িয়ে চললে শিশুদের বিশেষ কোনও ক্ষ’তি করতে পারে না। এই ভা’ই’রাসের কবলে পড়লেও শিশুরা ক্রম’শ সুস্থ হয়ে ওঠে। শিশুদের তুলনামূলক ভাবে পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা হলে সং’ক্র’মণের ঘটনাও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

• নারীরাও কোভিড-১৯ ভা’ই’রাসের থাবা থেকে কিছুটা নিরাপদ। এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, মেয়েদের মধ্যে অটোইমিউন ডিজিজের (শ্বেতী, এসএলই, থাইরয়েড ইত্যাদি) প্রবণতা বেশি হওয়ায় কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তারা বেশির ভাগ সময়ই জিতে যান। শরীর কোনও না কোনও অ্যান্টিবডি তৈরি করে ফেলে। তাই আক্রান্ত মেয়েদের মৃ’ত্যু’হার অনেক কম।

• ধূমপায়ী পুরুষদের মধ্যে এই অসুখের মারাত্মক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। মনে করা হচ্ছে যে, ধূমপানের ফলে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের লাইনিং কিছুটা কমজোর থাকে। তাই কোভিড-১৯ ভা’ই’রাস এদের শ্বাসনালী ও ফুসফুসকে আ’ক্র’মণ করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

• কোভিড-১৯ আক্রান্ত অশীতিপর বয়স্কদের মৃ’ত্যু হার সব থেকে বেশি। কারণ এদের শরীরে রো’গ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয়।

• কোভিড-১৯ ভা’ই’রা’সের বড় সড় সংক্রমণে শুধুই যে শ্বাসনালী ও ফুসফুস আক্রান্ত হয় তা নয়, ইন্টেস্টাইনের আবরণ একেবারে নষ্ট করে দেয়। শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ হু হু করে কমে যেতে শুরু করে। ক্রমশ মাল্টি অরগ্যান ফেলিওরের দিকে এগোয়।

• কিছু কিছু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ব্যবহার করা হলেও খুব যে কার্যকর তা এখনও বলা যাচ্ছে না।

• অনেকেরই ধারণা, গরম পড়লে কোভিড-১৯ ভাইরাসের দাপট কমবে। কিন্তু এই ভা’ই’রা’সের জিন মিউটেশনের ধরন দেখে এখনই এ বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

• কোভিড-১৯-এর হাত থেকে বাঁচতে ন্যুনতম ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুতেই হবে। হাত ধুলে এনভেলপ ফ্লু জাতীয় কোভিড-১৯ ভা’ই’রাসকে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব। পানি না থাকলে ৬০–৭০ শতাংশ ইথাইল অ্যালকোহল-যুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে ভালো করে হাত পরিষ্কার করে নেয়া উচিত। ভা’ই’রা’সের বি’রু’দ্ধে লড়তে টাটকা শাকসবজি ও ফল খেতে হবে’। ধুমপান ও মদ্যপান ছাড়তে হবে।