হাত না থাকায় কনুই ও গাল দিয়েই বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছে অদম্য মনি

কনুইয়ের নিচ থেকে দুটি হাত নেই। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি শরীরের অসম্পূর্ণতা। দুই হাতের কনুই ও গালের সাহায্যে অংশগ্রহণ করছে বৃত্তি পরীক্ষায়। জন্মগতভাবেই প্রতিবন্ধী এই শিশু শিক্ষার্থীর নাম মাফছেরাতুন নুর মনি (১১)।
সে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার দেউতি (বানিয়ার ভিটা) গ্রামের কৃষক জাকিউল আহমেদ ও ফাতেমা বেগম দম্পতির মেয়ে। দুই বোনের মধ্যে সে ছোট। মনি দেউতি আইডিয়াল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় মনি বৃহত্তর রংপুর কিন্ডার গার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পীরগাছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অন্য পরীক্ষার্থীদের মতোই স্বাভাবিকভাবে লিখেছে সে।
পরীক্ষা শেষে মনি জানায়, ‘অন্যদের মতো লিখতে না পারায় কষ্ট হয় তার। তবুও সে তার সাধ্যমতো চেষ্টা করে খাতায় লিখেছে। কারও বোঝা হয়ে না থেকে সে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়।’
মনির বাবা জাকিউল আহমেদ বলেন, ‘মনি জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী। স্থানীয় কয়েকটি সরকারি স্কুলে ভর্তি করার চেষ্টা করেও তাকে ভর্তি করাতে পারিনি। প্রতিবন্ধী হওযায় কোনো স্কুলেই তাকে ভর্তি করে নেয়নি।
পরে কিন্ডার গার্টেন স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছি। সে একাই চলাফেরা করতে পারলেও তাকে খাওয়ায় দিতে হয়। স্কুলে তার সহপাঠীরাই তাকে সহযোগিতা করে। সে আরো এগিয়ে যেতে চায়।’
দেউতি আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম রাশেদ বলেন, ‘প্রতিবন্ধী হলেও মনির ইচ্ছা শক্তি অনেক বেশী। সে নিয়মিত স্কুলে আসে। পড়াশুনায় খুবই ভালো।’
জানতে চাইলে ওই কেন্দ্রের সচিব খোরশেদ কবির বাবুল বলেন, ‘প্রতিবন্ধী হিসেবে কিছু সুবিধা দেওয়ার জন্য মনিকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু মনি সে সকল সুবিধা না নিয়ে স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের মতো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।’