বিজেপি সাংসদ জীবনরক্ষায় বোরকা পরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়েছিলেন

Dec 14, 2019 / 05:55pm
বিজেপি সাংসদ জীবনরক্ষায় বোরকা পরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়েছিলেন

ভারতে রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) পাস হওয়ার পর অভিনেত্রী ও বিজেপি সাংসদ রূপা গাঙ্গুলী টুইট করে জানান, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার জীবন রক্ষার জন্য তাকে এবং তার মাকে বোরকা পরে পালাতে হয়েছিল।

তার এই টুইট ঘিরে ভারতজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

রুপা লেখেন, আমি তো খান টাইগারের বেগম হয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে অপহরণ করতে এসেছিল। সে রাতে যদি আমি এবং আমার মা বোরকা পরে দিনাজপুর থেকে পালাতে না পারতাম। অমিত শাহ আপনাকে কী বলতে হবে? কত মানুষ আপনাকে এবং নরেন্দ্র মোদিকে আশীর্বাদ করেছে।

রূপা গাঙ্গুলি বলেন, ভারত আমাদের জায়গা না দিলে আমরা কোথায় যাব? কেউ ভাবে না কেন? আমরা কতবার গৃহহীন থাকব? আমার বাবা তার দেশে, কখনও নারায়ণগঞ্জে, কখনও ঢাকা, কখনও দিনাজপুরে থাকেন। আমরা কত ঘন ঘন আমাদের বাড়ি পরিবর্তন করব? আমরা কতবার শরণার্থীর জীবনযাপন করতে পারি? নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯ এর জন্য ধন্যবাদ।

সে হিসেবে রুপা অনুপ্রবেশকারী। তাহলে ভারতে রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) অনুযায়ী তার নাগরিকত্ব কি থাকবে? নিজেই এমন প্রশ্ন ছুড়েছেন এই বিজেপি সাংসদ।

বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, রূপা গাঙ্গুলি তো নিজেই বলছেন, উনি বোরকা পরে এসেছেন। উনি তো নিজের পরিচয় প্রকাশ করেননি! সে ক্ষেত্রে তো উনি নাগরিক নন, একজন অনুপ্রবেশকারী! তা হলে বিজেপি তাকে সাংসদ করল কী করে? এখনই তার পদত্যাগ করা উচিত।

উত্তরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, রূপা শরণার্থী হয়ে থাকলে কালই নাগরিকত্বের আবেদন করবেন এবং পেয়েও যাবেন। আর শরণার্থী অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম— অনেক রাজ্য থেকেই অনেকে সাংসদ হয়েছেন।

অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের এমন জবাবে তার দিকে প্রশ্নের তীর ছুড়েছেন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, ‘অ-নাগরিক’ সাংসদদের নিয়ে গঠিত সরকার কি বৈধ? রূপার মতো বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশকারীরা কি শরণার্থী হিসেবেই নাগরিকত্বের অধিকার ভোগ করছেন? এটা কি স্ববিরোধিতা নয়?

উল্লেখ্য, রূপা গাঙ্গুলী একজন ভারতীয় অভিনেত্রী, সঙ্গীতশিল্পী ও বিজেপি দলীয় সংসদ সদস্য। কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ছবিতে কপিলা চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।