ভারতের মুসলিম বিরোধী নাগরিকত্ব বিল রাজ্যসভায়ও পাস হল

Dec 11, 2019 / 11:08pm
ভারতের মুসলিম বিরোধী নাগরিকত্ব বিল রাজ্যসভায়ও পাস হল

লোকসভার পর এবার ভারতের রাজ্যসভাতেও পাস হল বহুল বিতর্কিত মুসলিমবিরোধী নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল।

সোমবার রাতে লোকসভায় বিলটি পাসের পর বুধবার রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) উত্থাপন করেন বিজেপি প্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

রাজ্যসভায় ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিরোধীদলগুলোর মধ্যে জোর বিতর্কের পর ভোটাভুটিতে ১২৫টি ভোট পড়েছে বিলের পক্ষে। বিপক্ষে ভোট পড়েছে ১০৫টি। এবার রাষ্ট্রপতি সই করলেই এই বিল আইনে পরিণত হবে।

রাজ্যসভায় আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ দাবি করেন, লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে ধর্মীয় প্রতারণা হয়েছে। এই বিলের মাধ্যমে সেই শরণার্থীদের অধিকার দেয়া হবে।

ভারতে বসবাসকারী মুসলিমদের আশঙ্কার কোনও কারণ নেই বলেও আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সন্ধ্যার দিকে জবাবি বক্তৃতায় অমিত শাহ বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশে এই বিল আনা হয়নি। আগের সরকার বিষয়টির যথাযথ মোকাবিলা করতে পারেনি।

বিরোধী দল কংগ্রেসের পক্ষে বিজেপিকে আক্রমণ করে আনন্দ শর্মা বলেন, এই বিল ‘ভারতের আত্মা’র উপরে আঘাত। বিল নিয়ে বিজেপি কেন তাড়াহুড়ো করছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

অমিত শাহের কথার সূত্র ধরেই বিজেপিকে তোপ দেগেছে তৃণমূল কংগ্রেসও। নোটবন্দির কথা তুলে দলের সংসদ সদস্য ডেরেক ওব্রায়েন বলেন, আপনারা আশ্বাস দিলেও সিএবি নিয়ে আশঙ্কার কারণ আছে। কারণ, নোটবন্দির সময়েও প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তার ফল কী হয়েছে তা সবাই জানেন।

এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি ভারতীয় আইনসভার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাস হওয়ায় আইন আকারে গৃহীত হলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলো থেকে আসা কেবল অমুসলিমদেরই (হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, শিখ ও পার্সি) নাগরিকত্ব মিলবে।

ভারতের ১৯৫৫ সালের মূল নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে,নাগরিকত্ব পেতে হলে দেশটিতে থাকতে হবে ১১ বছর। তা কমিয়ে এখন পাঁচ বছর করা হয়েছে। সংশোধিত বিলের উদ্দেশ্য প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলোর অমুসলিমদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া। তবে বিরোধীরা বলছেন,এই বিল মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক।

বিভিন্ন ইসলামপন্থী, বিরোধী ও মানবাধিকার গোষ্ঠীর দাবি, ভারতের ২০ কোটি মুসলমানকে কোণঠাসা করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডারই অংশ এই আইন।

উত্তরপূর্ব ভারতের স্থানীয়রা বিভিন্ন কারণে এই আইনের বিরোধীতা করছেন। তাদের আশঙ্কা, এতে বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক হিন্দু অভিবাসীর ঢল নামবে।