তার কাছে এটি শুধু ব্যবসা না, বরং ভালোবাসা

দোকান-অফিস, বাসা-বাড়িতে পতাকা ওড়ে বিজয়ের! সেই পতাকা বিক্রি করেন মো. আসর আলী ফকির। মাথার ও হাতের পতাকা বেল্ট আর ছোট বড় নানা রকমের পতাকা বিক্রিতে বছরের চার মাস যায় উৎসবে।
রাজধানী ও জেলা সদরে অসংখ্য ফেরিওয়ালা রয়েছেন। তবে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সমরোজ আলীর ছেলে আসর আলী ফকিরের চিন্তা-ভাবনা একদম ভিন্ন।
‘শুধু ব্যবসা নয়, বিজয়ের মাসে সবার ঘরে ঘরে পতাকা দেখতে চাই।’ তাই তিনি ছুটে চলেন প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
আসর আলী ফকির যুগান্তরকে বলেন, ভাই ব্যবসা তো আছেই, গ্রামের মানুষ ইচ্ছা থাকলেও একটি পতাকা বানাতে পারে না। শহরে পতাকা ওড়ে, বানানোরও অনেক কারিগর আছে। সেটা গ্রামে বা গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট বাজারগুলোতে নেই।
দূরত্বের কারণেও শহর থেকে নেয় না অনেকেই। তাই শুধু ব্যবসা নয়, দেশটার জন্য মায়া হয়, ভালো লাগে। জেল খাটলে বুঝতেন, পরাধীন কারে কয়; আমরা স্বাধীন হয়েছি, সেই ভালোবাসাটাই বড়!
পতাকার বিক্রির এ আয়েই চলছে ৩ কন্যাসহ ৫ জনের পরিবারের উপার্জন। তার বাড়ি এ উপজেলার সিধলা ইউনিয়নের মনাটি গ্রামে। তার বড় মেয়ে আরিফা আক্তার নবম শ্রেণি, অনামিকা আক্তার প্রথম শ্রেণি ও আরেক কন্যা সোহানা আক্তার শিশু শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
আসর আলী ফকির জানান, মহান বিজয় দিবস, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আর পহেলা বৈশাখ- এ চার দিবস ঘিরে চার মাস কেটে যায় উৎসবে। আর এই উৎসবেই পতাকা নিয়ে ছুটে চলেন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও।
পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, নিপীড়ন আর দুঃশাসনের কুহেলিকা ভেদ করে ১৯৭১ সালের এই মাসে প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝিকমিক করে উঠেছিল লাল-সবুজের বিজয় পতাকা। বিজয়ের মাস মানেই লাল-সবুজের রঙ।
আসর আলী ফকির এখন সেই রঙ ছড়িয়ে যাচ্ছেন সব বাঁধা পেরিয়ে গ্রামাঞ্চলেও।