চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ে ট্রেবল ম্যানসিটির

২০১১-১২ মৌসুমে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করার পর অবশ্য প্রতিটি মৌসুমে খেলেছে ম্যানসিটি। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ইউরোপসেরার মঞ্চে প্রথমবারের ট্রফি জয় করেছে পেপ গার্দিওলার দল। একইসঙ্গে ইংলিশ জায়ান্টরা মৌসুমে তিন আসরের শিরোপা ঘরে তুলে নিশ্চিত করল ট্রেবল জয়।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ জয়ের পর এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফিও ঘরে নিয়ে যাচ্ছে সিটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে তারা এই কৃতিত্ব দেখাল।
শতকরা ৫৬ ভাগ সময় বলের দখল রাখে ম্যানচেস্টার সিটি। সাতটি শটের ভেতর চারটি লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল। তাদের প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান ১৬টি শট নিলেও লক্ষ্যে চারটি রাখতে সক্ষম হয়।
শনিবার ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে হওয়া ফাইনালের তৃতীয় মিনিটে আক্রমণ হানে সিটি। কেভিন ডি ব্রুইনের বাড়ানো বল পেয়ে বাঁ পায়ে উঁচু শট নেন আর্লিং হালান্ড। রেফারি বাজান অফসাইডের বাঁশি।
ষষ্ঠ মিনিটে রদ্রির পাসে বল পাওয়া বের্নার্দো সিলভার বাঁ পায়ের শট অল্পের জন্য জালের দেখা পায়নি। তাই ম্যানসিটির এ যাত্রায় পাওয়া হয়নি লিড।
ইন্টার ১২ মিনিটের মাথায় পেয়েছিল গোলের সুযোগ। মাত্তিও দারমিয়ানের কাছ থেকে পাস পেয়ে হেড নেন লৌতারো মার্টিনেজ। গোলরক্ষক এডারসন তা প্রতিহত করেন।
খেলার ২৬ মিনিটে এডারসনের লাইন থেকে বেরিয়ে আসায় নিকোলো বারেল্লা ৪০ গজ দূর থেকে শট নেন। বারেল্লার শট অনেক বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় লক্ষ্যভেদ হয়নি।
কয়েক সেকেন্ড পরই ডি ব্রুইনের পাসে বল নিয়ে দুরন্ত শট নেন হালান্ড। নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে বাঁ হাঁটু দিয়ে তা ঠেকান ইন্টারের গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা।মিনিট দুয়েক পর ডি ব্রুইনের দূরপাল্লার শটও ওনানা প্রতিহত করেন।
দারুণ খেলতে থাকা ডি ব্রুইনে ইনজুরিতে পড়ায় ৩৫ মিনিটে বেঞ্চে বসতে বাধ্য হন। তার বদলে মাঠে নামেন ফিল ফোডেন।
বিরতির আগে যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে বের্নার্দো সিলভার অ্যাসিস্টে বল নিয়ে দূরপাল্লার শট মারেন ম্যানেয়েল আকাঞ্জি। পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে যাওয়ায় গোলশূন্য থাকে প্রথমার্ধ।
৫৭ মিনিটে ইনজুরিতে পড়া এডিন জেকোর পরিবর্তে রোমেলু লুকাকুকে মাঠে নামান ইন্টার কোচ সিমোন ইনজাঘি। দুই মিনিট পরই লুকাকুর শট ঠেকান এডারসন।
ম্যাচের ৬৮ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মেলে। আকাঞ্জির পাসে বল নিয়ে বের্নার্দো ডি বক্সের মাঝখানে কাট ব্যাক করেন। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় দারমিয়ানের গায়ে বল লেগে তা রদ্রির পায়ে চলে যায়। ১৬ গজ দূর থেকে ডান পায়ের বুলেট গতির শটে নিশানাভেদ করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রি, লিড পায় সিটি।
খেলার ৭১ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল ইন্টার। ডেনজেল ডামফ্রিসের হেড পাসে হেড নেন দিমারকো। বল উপরের পোস্টে লেগে ফিরে যায়। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে লুকাকুর ডান পায়ের শট থামান সিটির গোলরক্ষক।
ছয় মিনিট পর রদ্রির কাছ থেকে বল পাওয়া ফোডেনের শট ঠেকান ওনানা। ফলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি।
৮৮ মিনিটে রবিন জোন্সের হেড পাসে বল পাওয়া লুকাকু নেন হেড। পা দিয়ে এডারসন বল ঠেকান। সিটির গোলরক্ষকের পা গোললাইনের ভেতরে ছিল বলে লুকাকু অভিযোগ করলেও রেফারি তা আমলে নেননি।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে মার্টিনেজের হেডে বাড়িয়ে দেয়া বলে শট নেন লুকাকু। বল পোস্টের কাছ দিয়ে বেরিয়ে গেলে ইন্টারের সমর্থকদের মুখে নেমে আসে রাজ্যের হতাশা।
যোগ করা সময় ৫ মিনিট ধার্য করা হয়। পরে অবশ্য তা আরও এক মিনিট বেশি মাঠে গড়ায়। অন্তিম মুহূর্তে ইন্টার কর্নার কিক পায়। দিমারকোর নেয়া কর্নার কিকে হেড করেন জোন্স। সিটির গোলরক্ষক তা প্রতিহত করার সঙ্গে সঙ্গে রেফারি শেষ বাঁশি বাজান। জয়ের আনন্দে মাঠে উদযাপন শুরু করে ম্যানচেস্টার সিটি।