বিশ্বকাপ নিয়ে যে আবদার করল পাকিস্তান

এশিয়া কাপ ইস্যুতে এখন মুখোমুখি অবস্থানে আছে রাজনৈতিক এবং ক্রিকেটীয় ‘চিরশত্রু’ ভারত এবং পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড। সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপে ভারত অংশগ্রহণ করবে না। তারা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টুর্নামেন্ট চায়।
অন্যদিকে পিসিবিও হুমকি দিয়েছে যে, ভারত যদি পাকিস্তানে গিয়ে এশিয়া কাপ না খেলে, তারাও ভারতে গিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলবে না! এবার তো পিসিবি প্রধান নাজাম শেঠি তাদের অবস্থান আরও সুস্পষ্ট করলেন।
ভারতের জন্য ‘হাইব্রিড’ এশিয়া কাপ আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। অর্থাৎ, ভারতের ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হবে। বাকি দলগুলো খেলবে পাকিস্তানে। তবে এই প্রস্তাবেও রাজী নয় ভারতসহ বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা।
আসলে ভারত পুরো টুর্নামেন্টই চায় নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। এমন অবস্থায় আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে পাল্টা প্রস্তাব দিলেন নাজাম শেঠি। তার বক্তব্য হলো, পাকিস্তান দল ভারতের মাটিতে যাবে না। তারা নিজেদের ম্যাচগুলো খেলবে বাংলাদেশ অথবা আরব আমিরাতে।
বিবিসির পডকাস্টে নাজাম শেঠি বলেছেন, ‘শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ অনানুষ্ঠানিকভাবে আমাদের পরিকল্পনার বিপরীতে অবস্থান নেওয়ায় বিস্মিত হয়েছি। মাসখানেক আগে সবশেষ এসিসি সভায় আমরা সবাই ঐক্যমতে পৌঁছেছিলাম যে পাকিস্তান এশিয়া কাপে খেলবে এবং পাকিস্তান ছাড়া কোনো এশিয়া কাপ হবে না।
এশিয়া কাপের প্রায় ৮০ শতাংশ রাজস্ব আসে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচগুলি থেকেই। সূচি এমনভাবে করা হয়েছে যেন আমরা অন্তত দুটি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ পাই, দুই দলই ফাইনালে গেলে হবে তিনটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একমাত্র বাংলাদেশের আপত্তি ছিল যে, সেপ্টেম্বরে আরব আমিরাতে অনেক গরম থাকে এবং তা একটি সমস্যা। আরেকটি সমস্যা ছিল লজিস্টিকসের। এখন আমরা যে পরিকল্পনা নিয়েছি, তাতে সব লজিস্টিকাল সমস্যার সমাধান হওয়ার কথা।
তিন দিন আগে আমি যে প্রস্তাবনা দিয়েছি, তাতে সব সমস্যার সমাধান আছে। আমরা চারটি ম্যাচ খেলব পাকিস্তানে, দলগুলি সরাসরি সেখানে যাবে। এরপর আমরা নিরপেক্ষ কোনো ভেন্যুতে যাব, তা সেটা যেখানেই হোক। বাকি ম্যাচগুলি সেখানেই হবে।’
নাজাম শেঠি বলেন, ‘এমনকি এই ছাড় আমি দিয়েছি যে, ফাইনাল ম্যাচও নিরপেক্ষ ভেন্যুতেই হবে, তা সেটা ভারতের বিপক্ষে হোক বা অন্য যে কোনো দলের বিপক্ষে। সব সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ছাড় দিয়েছি।
পাকিস্তানের সরকার, সংবাদমাধ্যম এবং পাকিস্তানের জনগণ আমাকে একটি সম্মানজনক ও পারস্পরিক সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছে। আমরা খুশিমনেই এশিয়া কাপ খেলব। কিন্তু ভারত তাদের ম্যাচগুলি খেলতে পাকিস্তানে আসবে না এবং নিরপক্ষে ভেন্যুতেও কিছু ম্যাচ আয়োজন করতে দেবে না, এমনটি তো হতে পারে না।’
এরপরই ভারতকে পাল্টা হুমকি দিয়ে পিসিবি প্রধান বলেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না, এশিয়া কাপের পরপরই বিশ্বকাপ আসছে, তা হবে ভারতে এবং সেটি একটি আইসিসি ইভেন্ট। ভারত যদি পাকিস্তানে না আসে এবং আমার হাইব্রিড মডেলও বাতিল করে দেয়, তাহলে কি হবে? আমার মনে হয় না, আমাদের সরকার ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার অনুমতি দেবে।
আরব আমিরাত বা শ্রীলঙ্কা বা যেখানেই হোক, ভেন্যু দ্রুত রিজার্ভ করতে হবে। এর মধ্যেই অনেক সময় চলে গেছে। এসিসিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের অবস্থান আমরা পরিষ্কার করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘এসিসির উচ্চপদস্থ একজনের সঙ্গে দুবাইয়ে সভা হয়েছে আমার। তিনি এটা পছন্দ করেছেন এবং বলেছেন যে, এটা দারুণভাবে কার্যকর হতে পারে। তিনি বলেছেন যে জয় শাহর (বিসিসিআই সচিব ও এসিসির সভাপতি) সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বলবেন।
যদি হাইব্রিড মডেল এখানে কার্যকর হয়, তাহলে বিশ্বকাপেও আমরা এটা কাজে লাগাতে চাই। এর মানে, পাকিস্তানের ম্যাচগুলি হতে পারে বাংলাদেশে বা সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ছোট্ট একটি পদক্ষেপেই সব সমাধান হতে পারে। বাকিসব ম্যাচ ভারতে হবে।’