‘দ্য কেরালা স্টোরি’র প্রদর্শন কেরালাতেই বন্ধ

‘দ্য কেরালা স্টোরি’তে কোনও বড় তারকা নেই, তা সত্ত্বেও সকলকে অবাক করে দু-দিনে ১৯ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা আয় করেছে এই ছবি।
এমনকী খোদ প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা গেছে এই ছবির নাম। মুক্তির জন্য কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি নির্মাতাদের। তিনটি আদালতে গিয়ে লড়াই করতে হয়েছে। তবে সেই লড়াইয়ের ফল যে মধুর তা স্পষ্ট।
এই ছবিকে ‘ইসলাম বিরোধী’, ‘প্রোপাগান্ডা’ ছবিকে মুসলিম বিদ্বেষী বাম-কংগ্রেসের মতো রাজনৈতিক দল। অথচ বিজেপিসহ গেরুয়া শিবির এই ছবির সমর্থনে আওয়াজ তুলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথায়, এই ছবি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সুর তুলেছে।
এতকিছুর মধ্যেই ভারতের দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ুর সিনেমা হল থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। হিন্দু ও খ্রিস্টান মেয়েদের ফাঁদ পেতে ইসলামে ধর্মান্তকরণ এবং সন্ত্রাসী কাজে যোগ দেওয়ার প্রেক্ষাপটে তৈরি বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনের এই ছবি।
কেরল,তামিলনাড়ুর মতো বিজেপি-বিরোধী রাজ্যগুলোতে এই ছবি নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে একাধিক রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় সংগঠন থিয়েটারের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে এমন অজুহাতে তামিলনাড়ুতে ছবির প্রদর্শন বন্ধ করল তামিলনাড়ু থিয়েটার ওনার্স অ্যাসোশিয়েশন। পাশাপাশি তাঁদের দাবি এই ছবি দেখতে দর্শক হলমুখী হচ্ছেন না।
সংগঠনের সভাপতি এম সুব্রহ্মমণ্যম পিটিআইকে জানান, কেবলমাত্র জাতীয় মাল্টিপ্লেক্স মূলত পিভিআরেই এই ছবির বেশ কয়েকটি শো চলছিল। কিন্তু সেইগুলো না চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আইন-শৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে। তা ছাড়া শুক্র-শনিবার সেইসব শো দেখতে তেমন দর্শক হাজির হননি।
গত নভেম্বরে ছবির টিজার মুক্তির পর থেকেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। তারপর সময় যত গড়িয়েছে সুদীপ্ত সেনের ছবি ঘিরে বিতর্কের আগুন ততই বেড়েছে। এই ছবিকে করমুক্ত ঘোষণা করেছে বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশ। তামিল অভিনেতা-পরিচালক সীমান জোর গলায় বলেন, তামিলনাড়ুতে এই ছবি প্রদর্শিত হলে থিয়েটার ভাঙচুর করা হবে।
এই ছবির মধ্যমে ‘ইসলামোফোবিয়া’ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, এটির মুক্তি জাতীয় সংহতি ক্ষুণ্ন করবে, এমন অভিযোগ এনে ‘দ্য কেরল স্টোরি’র বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। যদিও সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্রকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ছবির মুক্তি আটকাতে অস্বীকার করে আদালত।
শুক্রবার দেশটির কেরল হাইকোর্ট ছবির মুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে অস্বীকার করে জানায়, কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য অবমানাকর কোনওকিছুই ছবির ট্রেলারে অন্তত উঠে আসেনি। আল্লাহই একমাত্র উপাস্য় এমনটা তুলে ধরা অপরাধ নয়। এই দেশে প্রত্যেক নাগরিকের নিজ ধর্ম মেনে চলা এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার অধিকার রয়েছে। সেটা আপত্তিজনক কেন?
আদালত আরও জানায়, ‘অসংখ্য় ছবিতে তো হিন্দু সন্ন্যাসীদের ধর্ষক হিসাবে তুলে ধরা হয়, তার বেলায়? হঠাৎ করে এখন এত সমস্যা কেন?’