অনেকেই আমাকে দমাতে চেষ্টা করছে, কিন্তু পারছে না: হিরো আলম

সম্প্রতি দেশের আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলমের স্যোশাল মিডিয়ার সবগুলো পেইজ হ্যাক হয়েছে। সোমবার (১ মে) রাতে হিরো আলম এ তথ্য সাংবাদিকদের জানান। তিনি দাবি করেন, ফেইসবুক, টিকটক, ইন্সটাগ্রাম পেইজসহ মোট ৯টি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে।
হিরো আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন,‘গত দু’দিন আগে ‘হিরো আলম’ নামে যে ফেইসবুক পেইজ ছিল সেটি হ্যাক করা হয়েছে। সোমবার (১ মে) সন্ধ্যায় আমার ব্যক্তিগত ‘আশরাফুল হোসেন আলম’ নামে আইডিও হ্যাক করা হয়েছে। সেখানে তারা পোস্ট করেছে- কী কারণে তারা আমার আইডি হ্যাক করেছে এবং তারা যে আমার ৯টি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছে সেটাও তারা স্বীকার করেছে।’
হ্যাকারদের নাম উল্লেখ করে এই ইউটিউবার বলেন,‘যে ছেলেটা হ্যাক করেছে তার নাম মিঞা আসকার। তারা হ্যাকার গ্রুপ। তাদের বেশির ভাগই দেশের বাইরে থাকে। আসকার আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চেয়েছিল। এই টাকা তাদের দিলে তারা এ কাজ আর করবে না। যেহেতু তারা দেশের বাইরে থাকে, তাদের নাকি আমরা কিছু করতে পারবো না।’
‘তারা দেশের বাইরে থাকে তো কি হয়েছে? তারা আজ হোক, কাল হোক দেশে আসবেই। তখন তাদের খুঁজে বের করতে পারবো। আর হিরো আলমের অ্যাকাউন্ট নষ্ট করলেই কি আর না করলেই কি? হিরো আলমকে পুরো বিশ্বের মানুষ চেনে।
তারা আমার অ্যাকাউন্ট নষ্ট করে কি করতে পারবে? এই যে আপনারা আজকে ৫০ জন সাংবাদিক এখানে আছেন। আপনাদের মাধ্যমে অন্তত ৫ কোটি মানুষ তো আমাকে দেখবে। আমরা হয়তো একটু হয়রানী হতে হলো।’ বলেন হিরো আলম। এ ঘটনার পর ‘হিরো আলম’ নামে নতুন একটি পেইজ খুলেছেন হিরো আলম। হ্যাকড অ্যাকাউন্টগুলো ফিরে পাওয়ারও চেষ্টা করছেন তিনি।
বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘হিরো আলম’ নামে যে পেইজটি ছিল সেটি হ্যাক হওয়ার পর ডিবি পুলিশ প্রধান হারুন স্যারকে জানাই, স্ক্রিন শট দেই।
আজকের বিষয়টিও তাকে আমি স্ক্রিনশট দিয়ে রেখেছি। আসলে একটা চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে আমার ক্ষতির চেষ্টা করছে। আমাকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আল্লাহপাক কাউকে যদি না মারে কেউ কাউকে মারতে পারে না।’
আপনি কাউকে সন্দেহ করছেন কিনা? জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘চক্রটা কে সেটা আমি জানি না। তবে এই ৯টি অ্যাকাউন্ট যে হ্যাক করেছে তার নাম মিঞা আসকার। তবে তাকে দিয়ে কে এই কাজটি করাচ্ছে সেটা আমি জানি না। তবে একটি চক্র অবশ্যই আছে।’
‘একটা চক্র চায় না হিরো আলমের জনপ্রিয়তা টিকে থাক। তারা হিংসা করে। যে তাকে আমরা এত গালি দিলাম, বকা দিলাম, হ্যারাজ করার চেষ্টা করলাম, তাকে মারলাম, তবুও তো তাকে দমাতে পারছি না।
কিছু করলেও একটা ছবি ফেসবুকে ছাড়লেও ভাইরাল হয়। লাইভ করলেও ভাইরাল হয়। একটা ভিডিও পোস্ট করলেও ভাইরাল হয়। অনেকেই আমাকে দমাতে চেষ্টা করছে। দমাতে পারছে না জন্যই এখন আইডি হ্যাক করেছে।’ বলেন হিরো আলম।
এদিকে আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে ঢাকা মহানগর ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে ডিবিপ্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে দেখা করে হ্যাক হওয়া আইডির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন হিরো আলম।
দুপুরে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘হিরো আলম এসেছিলেন। আমাদের এখানে লিখিত অভিযোগ করে জানিয়েছেন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটকসহ তাঁর ৯টি আইডি হ্যাক হয়েছে। আমাদের টিম কাজ করছে।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ (কাহালু এবং নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (একতারা প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হিরো আলম। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে ১৪-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি।