১১ বছর ধরে আটকে আছে তিস্তা চুক্তি, এটা লজ্জার : মোমেন

দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে দুই দেশের সুসম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও ১১ বছর তিস্তা চুক্তি সই না হওয়াকে লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছেন ভারতে সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটি জানান তিনি। চলতি সপ্তাহে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের গুয়াহাটিতে শুরু হয় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ নদীবিষয়ক কনফারেন্স। সেখানে নদীবিষয়ক ছিটমহল নিয়ে সাইড-লাইন বৈঠক চলাকালে মোমেন এমন মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে কেবল একটি বিবদমান ইস্যু- তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি- অমীমাংসিত রয়ে গেছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। এই দুই দেশ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি সমঝোতার ভিত্তিতে ভাগাভাগি ও ব্যবহার করছে। এসব অভিন্ন নদীর পানি ব্যবস্থাপনায় দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও যথেষ্ট দক্ষ ও পারদর্শী।’
কাংসে হিমবাহ থেকে উৎপন্ন তিস্তা নদী সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ১৯৪৭ সাল থেকেই তিস্তা নদীর অববাহিকায় ভারতের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ থাকায় পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত প্রতিবেশী বাংলাদেশ।
২০১১ সালে নিজেদের ব্যবহারের জন্য ৪২.৫ শতাংশ রেখে তিস্তার ৩৭.৫ শতাংশ পানি বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে রাজি হয়েছিল ভারত। খরার মৌসুমে এই পানি ব্যবহারে অগ্রাধিকার পাবে ভাটির দেশ বাংলাদেশ।
তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র বিরোধিতায় বাংলাদেশের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি এখনও।
এর পর আন্তঃসীমান্ত ও আন্তর্জাতিক এই নদীর পানি ব্যবহারে ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতে দীর্ঘদিন ধরেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ।
মোমেন আরও বলেন, বর্ষার মৌসুমি তিস্তার পানি ছেড়ে দেয়ার বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের আসাম রাজ্যে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা। সেই সঙ্গে খরার মৌসুমে পানি না ছাড়ায় খরায় ভোগে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে চীনের ব্যাপক আগ্রহের মধ্যেই ঢাকা-নয়াদিল্লি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নেওয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত।
জুন মাসে দুই পক্ষের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় যৌথ পরামর্শক কমিশন গঠনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা ও নয়াদিল্লি। এর মধ্য দিয়ে জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য ভারত সফরের পথ খুলে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।