শিশুকে সামান্য কানের দুলের জন্য হ’ত্যা, নারীকে গণধোলাই

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে তিন আনা ওজনের স্বর্ণের কানের দুলের জন্য পপি সাহা (৭) নামে সাত বছরের এক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে বামনী ইউপির সাগর্দি গ্রামের অস্বীনি সাহার বাড়িতে।
এ ঘটনায় ঘাতক রুমা আক্তারকে গণপিটুনি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। পরে পুলিশ রুমা ও তার স্বামী দিনমজুর এমরান হোসেনকে আটক করেছে। তারা একই বাড়ির প্রবাসী কাশেমের ভাড়াটিয়া ও পানপারা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
নিহত পপি সাহা (৭) একই গ্রামের প্রবাসী-নিমল সাহা ও ববিতা সাহার একমাত্র মেয়ে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রুমার ঘরে গত কয়েক দিন ধরে খাবার ছিল না। স্বামীও বাজার করছে না। শিশু পপির মায়ের কাছে ৪শ টাকা ধার চান; কিন্তু দেবেন না বলে জানান রুমাকে। গত চার দিন আগে পপি সাহাকে তার মা ১২ হাজার টাকা মূল্যের তিন আনা কানের দুল কিনে দেন। এ দুলের জন্য শিশুর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন ভাড়াটিয়া রুমা আক্তার।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রাইভেট পড়ে ঘরে এসে শিশুদের সঙ্গে খেলা করতে গিয়ে বেলা ১১টায় পপি নিখোঁজ হয়। সম্ভাব্য জায়গায় খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে দুপুর ২টার সময় ভাড়াটিয়া রুমার বাসায় শিশুকে খোঁজ করতে যান তার ফুফু। কিন্তু ফুফুকে বাসায় ঢুকতে না দিয়ে বাসা তালা দিয়ে তাড়াহুড়ো করে অন্যত্র চলে যাওয়ার সময় সন্দেহ হলে আটক করা হয় রুমাকে।
পরে বাসার তালা খুলে দেখেন খাটের নিচে হাটু ভাঙা অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয়েছে পপিকে। পরে উদ্ধার করে দেখে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এর আগেই কানের দুল বাজারে বিক্রি করে দেয় রুমা। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর মা ববিতা সাহা বাদী হয়ে ভাড়াটিয়া রুমা আক্তার (২৫), তার স্বামী এমরান হোসেনকে (৩৫) আসামি করে রায়পুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এর আগে পুলিশ ওই দুইজনকে গ্রাম থেকে আটক করে থানায় আনেন।
রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল যুগান্তরকে বলেন, শিশুর কানের দুল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তাকে হত্যার ঘটনায় রুমা ও তার স্বামীকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। তাদের দুইজনকেই আদালতে পাঠানো হবে। রুমা এ হত্যার ঘটনার দায় স্বীকার করে আমাদের জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত চার বছর আগে রায়পুর পৌরসভার দেনায়েতপুর গ্রামের বয়াতিবাড়ির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত রুমা আক্তার দেড় বছর কারাভোগ করেন। রুমা বর্তমানে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন বলে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন