হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে পদ্মার পানি

পদ্মায় বাড়ছে পানি, কুষ্টিয়ার ১৭ গ্রাম বন্যাকবলিত, হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে পদ্মার পানি। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ১৭টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
পাউবো জানিয়েছে, গড়ে প্রতিদিন প্রায় পদ্মায় ১০ সেন্টিমিটার করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বাড়ার কারণে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। নদীর পানিতে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৭টি গ্রাম বন্যাকবলিত।
এছাড়া পাশের চিলমারী ইউনিয়নের বেশ কিছু বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
নদীর পানি বৃদ্ধিতে কুষ্টিয়া সদর, ভেড়ামারা, কুমারখালী ও খোকসা উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে মঙ্গলবার সকাল ৬টায় পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগামী কয়েক দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে পাউবো সূত্র জানায়।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে এসে জানান, সেখানকার অন্তত ৬০ ভাগ বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে এসব গ্রামের বিপুলসংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ জানান, তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, মঙ্গলবার সকালে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে বলে জানতে পেরেছি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ একটি টিম উপদ্রুত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে গত দুই সপ্তাহের পানি বাড়ার কারণে পদ্মা ও গড়াই নদী সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। রোববার ভোর ৫টার দিকে নদীর পানিতে হঠাৎ বাঁধের ভাঙন দেখা দেয়। এ সময় আশপাশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতুর প্রায় ১০০ মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নদীতে ধসে পড়ে। এতে চরম ঝুঁকিতে পড়েছে শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি।
এছাড়া কুমারখালী উপজেলার কুঠিবাড়ি সংলগ্ন শিলাইদহ ও কয়া ইউনিয়নে পদ্মার তীরবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনে ওই দুই ইউনিয়নের একাধিক পয়েন্টে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
সর্বশেষ সোমবার রাতে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শহর রক্ষা বাঁধের ৩০ মিটার এলাকা ধসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে গভীর রাতে শহরের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন