যুক্তরাষ্ট্র যে কারণে আফগানিস্তানে ব্যর্থ হলো

কাবুলের সিংহাসন থেকে তালেবানকে হটানো হয়েছিল ২০০১ সালে। দীর্ঘ ২০ বছর আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্র দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। আবারও দৃশ্যপটে তালেবান। ক্ষমতা বুঝে নেওয়ার অপেক্ষায় আছে তারা।
আফগানিস্তানে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যূত করার পর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে দেশটিতে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই চলতি বছরের এপ্রিলে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
পূর্ববর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট আফগান সংকট সামাধানের কোনো গ্রহণযোগ্য পথ বাতলে দেননি। তাই সেনা সরিয়ে নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না বাইডেনের সামনে।
আগের প্রেসিডেন্টের আমলে শুরু হওয়া এই ব্যয়বহুল যুদ্ধ শেষ করার জন্য নিজের দেশে ব্যাপক চাপে ছিলেন বাইডেন৷ কারণ অধিকাংশ মার্কিনিই এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল। অন্য একটি দেশে দখলদার তকমা জোটার পাশাপাশি নিজেদের জানমালের ঝুঁকির তীব্র বিরোধিতা করছিল যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
নিজের দেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখার জন্য বাইডেনের এই যুদ্ধ শেষ করার প্রয়োজন ছিল বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন।
অনেকেই আবার এধরনের জটিল আর বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাইডেনের অভিজ্ঞতার অভাবকে দায়ি করছেন।
২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত বাইডেন কখনো স্বতন্ত্রভাবে কোনো কার্যালয়ের দায়িত্ব পালন করেননি। তিনি দীর্ঘদিন আইনপ্রণেতা ছিলেন। তারপর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতি তিনি আগে মোকাবেলা করেননি। তিনি কখনোই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়, এমন পদে ছিলেন না।
এসব বিষয়গুলোই আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর ব্যর্থতার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
কাবুলের সিংহাসন থেকে তালেবানকে হটানো হয়েছিল ২০০১ সালে। দীর্ঘ ২০ বছর আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্র দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। আবারও দৃশ্যপটে তালেবান। ক্ষমতা বুঝে নেওয়ার অপেক্ষায় আছে তারা।
যদিও কট্টরপন্থী সংগঠনটির ক্ষমতা দখলে আফগানিস্তানের নারী অধিকার থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা ফের তালেবানের কাছে হস্তান্তর করার পর দেশটিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আতঙ্কিত সাধারণ নাগরিক আফগানিস্তান ছেড়ে পালাতে কাবুল বিমানবন্দরে ভীড় জমিয়েছে।
তালেবান কাবুল দখল করে নেওয়ার পর দেশ ছাড়ার সময় কাবুল বিমানবন্দরে ‘হুড়োহুড়িতে’ অন্তত পাঁচ জন নিহত হয়েছেন।
বিমানবন্দরে জনস্রোত ঠেকাতে মার্কিন সেনারা সেখানে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলে জানা গেছে।